জীবনের মূল মন্ত্র
তোমার জীবন কিন্তু একান্তই তোমার। তাই সেই জীবনকে কীভাবে সাজাবে,কীভাবে চালাবে তার সম্পূর্ণ চালিকাশক্তি থাকা উচিত তোমার নিজের হাতে।কখনই অমুকের জন্য বা তমুক ঘটনার জন্য তোমার জীবন নষ্ট হয়ে গেল-এমনটা ভাববে না। যে কোনো পরিস্থিতি বা ঘটনা পৃথিবীর জাগতিক নিয়মে ঘটতেই থাকবে। শুধু তুমি তোমার জীবনকে সুন্দর, সহজ ও আনন্দমুখর করে রাখতে পারো। নানা যুগে নানান মনীষী মানুষের জীবনকে সহজ সুন্দর ও সফল করার যে সব সূত্র বলে গেছেন আজ আমরা সেগুলি থেকে প্রধান সাতটি সূত্র তুলে ধরবো। তাহলে চলো কথা না বাড়িয়ে দেখে নিই জীবনের সাতটি মূল মন্ত্র।
এ কথা ব্যাখ্যার বেশি প্রয়োজন পড়ে না যে বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা কম কথা বলেন। আমরা জানি যে ভরা কলসি বাজে না। তার মানে তোমার সুন্দর জীবনের পরিকল্পনা, সুন্দর সুন্দর ভাবনা তোমার মনকে সর্বদা পূর্ণ করতে থাকবে-তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়তি কথা বিপত্তি ডেকে আনতে পারে। তাই মুখে কথা বলো কম কাজ করো বেশি ।
সমাজের মধ্যে আমাদের বাস। তাই চারপাশের মানুষের মধ্যে চাহিদা যন্ত্রনার শেষ নেই। প্রিয়জনও তোমাকে অনেক কিছু বলতে চায়। তোমার উচিত মানুষের কথা মন দিয়ে শোনো। শোনার পর যতটুকু প্রয়োজন বলবে-না হলে তারও দরকার নেই। কেননা অনেক কথা শোনাটাই তোমার কাজ । আর কোনো সমাধানের প্রয়োজন পড়ে না।
মনে রাখতে হবে যে কোনো কথা বা ঘটনায় অনেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া করে থাকে। আর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার জন্য কোনো বুদ্ধির প্রয়োজন হয় না। তাই নির্বোধের মতো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখানোর অভ্যাসটা ত্যাগ করতে থাকো-আর ধীরে সুস্থে ভেবে মন্তব্য করো-বা সমাধান করো। দেখবে তুমি কতটা ঠান্ডা মাথার মানুষ হয়ে উঠছো।
জীবনে চলতে গেলে মতবিরোধ ঘটতে থাকে নানা মানুষের সঙ্গে। জীবনে এভাবেই অনেক মানুষকে ত্যাগ করতে হয় আর অনেক নতুন নতুন মানুষকে গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু খাঁটি মানুষকে চিনে নিয়ে তাকে সঙ্গে রেখো। কেননা মুখোশের ভিড়ে আজ সাচ্চা মানুষের বড়ই অভাব। বিপদে আপদে ঐ মানুষটিই তোমার সহায় হবেন নিঃসন্দেহে।
আমরা জীবনকে সফল করার কথা ভাবি এবং বড় বড় সফল মানুষদের দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে থাকি। এটা কিন্তু তোমার হীনমন্যতার লক্ষণ। যারা স্বপ্নপূরণ করে এবং সফল হন; তারা প্রত্যেকেই জীবনে ঝুঁকি নিয়ে বড় বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাই জীবনের লক্ষ্য পূরণের স্বপ্ন থাকলে অবশ্যই বড় বড় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন। তুমি আজই ভেবে ফেলো কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছ। না বন্ধু কাল করবো- কাল হবে এটা আর বলো না।
মনীষী বলে গেছেন যতদিন বাঁচি ততদিন শিখি। এই শিক্ষা আমৃত্যু চলতে থাকে। তাই আমরা যে সব ভুল করি বা ভুল করতে দেখি- তার জন্য বড় আফশোস করতে থাকি। কিন্তু এই আফশোস করে নিজেকে আর হীনমন্যতায় ভোগাতে নেই। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ধাপ-এ করণীয় ঠিক করে ফেলো। আসলে জীবনটা একটা জার্নি। আমরা পূর্বের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে পরের কাজগুলিকে সহজ করতে পারি। তাই নিজের শিক্ষা অর্জনের পথকে থামিয়ে দিও না কখনোই।
আমি এই করেছি, ওই করেছি- এই কথা অনেকেই বলতে থাকেন। সাফল্যের পথে পারি দিতে দিতে মানুষের মধ্যে ইগো বা অহংবোধও জমতে শুরু করে; আর পতনের সূত্রপাত ঘটতে থাকে ওই অহংকার থেকেই। কাজেই বন্ধু মনে রাখতে হবে আমরা ছোটো ছোটো সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকবো — সঙ্গে সঙ্গে যাবতীয় ইগোকেও নিয়ন্ত্রণ করতে শিখবো। এই ইগো হল আমাদের বোঝামাত্র। এই বোঝা তোমাকে সাফল্যের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে বাঁধা দিতে থাকবে। তাই ইগো বা অহংকার নীচে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হালকা হও আর এগুতে থাকো সাফল্যের শিখরে।
বন্ধুরা, জীবনের মূল মন্ত্র লেখাটি কেমন লাগলো ? আশা করি লেখাটি তোমার জীবনে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে । লেখাটি ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করে দিতে ভুলো না। আমাদের সঙ্গে থাকো ফেসবুক পেজটিকে লাইক করে দিও। ভালো থেকো।