প্রকৃত সম্মান অর্জন করার ৭টি উপায়
This Article is written by Kishore Majumder
সম্মান বলতে কী বোঝায় ? যখন আমরা কোনো ব্যক্তির মধ্যে থাকা গুণাবলি, বিশ্বাস,দক্ষতা প্রভৃতির জন্য তাকে শ্রদ্ধা করি ; কিংবা পদাধিকার বলে যাদের কথা বক্তব্য, নির্দেশ শ্রদ্ধার সঙ্গে উপলব্ধি করি তখন বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে সম্মান দেওয়া হল। এছাড়াও যখন কারো অভিজ্ঞতার জন্য তাকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকি তাহলে বলা হয় তাকে সম্মান দেওয়া হল , তার মানে এই যে নয় যে নির্গুণ ব্যক্তিকে অবজ্ঞা করা উচিত। মানুষ হিসেবে কারো প্রতি সদ্ব্যবহার করার মানবিক আচরণই হল সম্মান দেওয়া।
সম্মান দু ‘ধরণের হতে পারে –
ক। পদাধিকারে অর্জিত
খ। গুণাবলির দ্বারা অর্জিত
পেশাগত বা সামাজিক কাজের দায়িত্ব সম্পর্কিত বিষয়ে লাভ করা সম্মান সামনাসামনি করে থাকে বটে কিন্তু পদ গেলেই তা কমে যেতে পারে। তাই পদবলে অর্জিত সম্মান স্থায়ী নাও হতে পারে। তাই এখানে ব্যক্তিত্ব ও গুন্ দ্বারা অর্জিত সম্মানের কথাই আলোচনা করা হবে। কারণ আচরণ ,ব্যবহার ,ব্যক্তিত্ব কিংবা গুন্ দ্বারা অর্জিত আন্তরিক সম্মান জোর করে আদায় করা যায় না এটা আসে হৃদয় থেকে তাহলে এসো বন্ধু জেনে নেই কোন ৭টি বিষয় সেই সম্মান লাভের মূল চাবিকাঠি –
১. Do what you say / কথা রাখা :-
বন্ধুরা , নিশ্চয় জানো যে চারপাশের মানুষের মধ্যে থাকা সকলেই সম্মান পায় না। তার কারণ একটাই সম্মান অর্জন করতে হয়। এটাও মানুষের বিশেষ দক্ষতা। তার মধ্যে প্রধান বিষয় হল কথা দিয়ে কথা রাখা। যেমন – ‘ সন্ধ্যায় তোকে ফোন করবো ‘,’ আমি আপনার এই কাজটা কালকের মধ্যে করে দেব ‘, ‘ ঠিক আছে আমি ভেবে তোকে জানাবো ‘- দেখ বন্ধুরা এই কথাগুলো বলার পর বেশিরভাগ বক্তাই কথা রাখেন না , ফলে তারা সম্মানলাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।
২. Clear opinion : ধারণার স্বচ্ছতা :-
কোনো বিষয় সম্পর্কে সে দেশ , কাল ,রাজনীতি , কিংবা পেশাদারিত্বের কোনো বিষয় – সেটা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পোষণ করা প্রয়োজন। ‘ দু নৌকায় পা ‘ দিলে আন্তরিক সম্মান লাভ করা যায় না। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা দরকার। আসলে শ্রোতা কিংবা সামনের জন তোমার সম্পর্কে সঠিক ধারণা পোষণ করলেই তুমি সম্মান পাবে।
৩. Speak only when needed : প্রয়োজনে কথা বলা :-
মনীষীদের উক্তিতেই রয়েছে – ” যে যত কম কথা বলে , তার ইজ্জত ততই সুরক্ষিত থাকে। “- এর থেকেই বোঝা যায় প্রয়োজনহীন কথা যেমন বিপদ বাড়ায় তেমনি সম্মানও কমাতে থাকে। তবে চোখের সামনে কোনো অন্যায় বা অপ্রীতিকর বিষয় অস্বস্তির কারণ হলে অবশ্যই বলা উচিত। কেন না প্রতিবাদহীন মানুষও সম্মান পান না। তবে মনে রাখতে হবে নিজের ও অপরের সম্মান বজায় রেখেই প্রয়োজনীয় কথা বলতে হবে।
৪. Respect yourself : নিজেকে সম্মান করা :-
যে নিজেকে সম্মান দেয় না সে কারো কাছেই সম্মান পেতে পারে না। প্রত্যেকটি মানুষের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ,ইচ্ছা ,রুচি ,শখ ,ভালোলাগা ,খারাপলাগা থাকে , তাই নিজের আন্তরিক বিষয়গুলিকে সম্মান দিয়েই কাজ করা উচিত। আত্মসম্মানবোধ না থাকলে যেমন ব্যক্তিত্ব গঠিত হয় না ,তেমনি ব্যক্তিত্ব না থাকলে কারো কাছে সম্মান পাওয়া যায় না। এখানে মনে রাখতে হবে – সম্মান পাবার জন্য কৃত্রিম লোক দেখানো ব্যক্তিত্ব কখনোই স্থায়ী হয় না। তুমি যা – তাই থাকো ,আর নিজেকে শ্রদ্ধা করো – সম্মান তবে পাবেই।
৫. Give your best / সেরাটা দাও :-
প্রত্যেক মানুষের কাজ করার ক্ষমতা ও পদ্ধতি আলাদা আলাদা। কিন্তু তবু দেখো সকলের সমবেত চেষ্টায় কত সুন্দরভাবে পৃথিবীটা চলছে। উল্টোদিকে দেখ তোমার চারপাশে অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজেদের কথা না রাখা স্বভাব কিংবা , কাজ যথাযথ না করতে পারার জন্য অপরের কাছে বীতশ্রদ্ধ হন। তাই যখন যাই করো না কেন নিজের সেরাটা দেবার চেষ্টা করো। -আর সেটা আন্তরিকভাবেই করো।
আরও পড়ুন : সবসময় খুশি থাকার ১০ টি উপায়
৬. Respect others : সম্মান দেওয়া :-
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছিলেন – ” কাউকে ভালোবাসা না দিলে বিনিময়ে যেমন ভালোবাসা পাওয়া যায় না ; তেমনি নিজে মানুষ না হলে অপরকে মানুষ করা যায় না। ”
কথাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ সম্মান লাভের অধিকারী , এবং সম্মান প্রত্যাশা করে সবাই। তাই যে কোনো ব্যক্তিকেই তার যোগ্য সম্মান দেওয়া প্রয়োজন। দর্শকের ভিড়ে মিশে গিয়ে এমন কাউকে গালিগালাজ বা অসম্মান করতে যেওনা। কারণ সেই ভিডিও ফুটেজ বা মানুষের ভেতরে থাকা দৃশ্যের স্মৃতিটি তোমার ভবিষ্যৎ সম্মান কেড়ে নিতে পারে। তাই সবসময় মনে রাখবে মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে হবে। তা সে যেই বর্গের মানুষ হোক না কেন।
৭. নিরপেক্ষতা :-
জাতি , ধর্ম ,বর্ণ প্রভৃতি সামাজিক বৈষম্যের উর্ধে মানসিকতা থাকতে হবে। অনেক সম্পদশালী ব্যক্তি , সম্মানীয় উপাধিধারী ব্যক্তি, কৌলিক পদবি , দেহ সৌষ্ঠব প্রভৃতি দেখে বাড়তি সম্মান না জানিয়ে মানুষের যথাযোগ্য প্রাপ্য সম্মান দেওয়া প্রয়োজন। নিরপেক্ষ মানসিকতা তোমাকে অন্যদের চোখে শ্রদ্ধার্হ করে তুলবে নিঃসন্দেহে।
আশা করি বন্ধুরা নিশ্চয় বুঝে গেছ সম্মানলাভের সাতটি মূল বিষয়। লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করে দাও। এরকম আর কী কী বিষয় সম্পর্কে লেখা চাও তা আমাদের কমেন্ট করে জানাও। আর হ্যাঁ আমাদের ফেসবুক পেজ – এ ফলো করতে ভুলে যেও না যেন। খুব ভালো থেকো সুস্থ থেকো।
This Article Is Written By