শিক্ষা ও জীবন

বিশ্বের যে ৫-টি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সবচেয়ে উন্নত।

3 Minute Read
বিশ্বের যে ৫-টি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সবচেয়ে উন্নত।

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড – একথা প্রচলিত । আসলেও তাই। কেননা , যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যত উন্নত সেই দেশের প্রযুক্তি, চিন্তা আর অর্থনৈতিক দিক ঠিক ততটাই উন্নত। সঠিক ও প্রগতিশীল শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ডকে মজবুত করে তোলে। আজকের শিশু আগামীকালের নাগরিক। তাই সঠিক ও উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত নাগরিক সেই দেশের মূল্যবান সম্পদ। আজ তাই আমরা শিক্ষাব্যবস্থায় বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত পাঁচটি দেশের শিক্ষাব্যাবস্থা নিয়ে একটি তথ্যবহূল আলোচনা তুলি ধরছি।

উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা একটি দেশের অগ্রসর এবং বিকাশকে সুনিশ্চিত করে। একটি দেশ যদি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করে, তবে সেই দেশের নাগরিকদের শিক্ষাগত স্বাধীনতা, বুদ্ধিমত্তা, সামরিক বিকাশ প্রভৃতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে উন্নতির ধারাকে বহন করে। একটি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আমরা পাঁচটি দেশের উল্লেখ করবো যা শিক্ষাব্যবস্থার দিকে প্রযুক্তিগত এবং সাংস্কৃতিক উন্নতির পীঠস্থান হিসাবে পরিচিত।

১. ফিনল্যান্ড:

ফিনল্যান্ড বিশ্বের সেরা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। ফিনল্যান্ডে শিক্ষা প্রণালীটি ছাত্রদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার ওপর ভিত্তি করে যা শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভরশীলতা এবং বিচারশীলতাকে উন্নত করে। ফিনল্যান্ডে শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের শিক্ষা পদ্ধতি নির্বাচন করতে দেওয়া হয়। ফিনল্যান্ডে যোগ্য শিক্ষকদের সুবিধায় সরকার একটি পেশাদার স্তর স্থাপন করেছে এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক এবং শারীরিক বিকাশের জন্য শিক্ষা পদ্ধতিকে নিয়মিত আপডেট করে। সেই সাথে, ফিনল্যান্ডে শিক্ষা বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কিত করে এবং প্রায়োগিক কাজের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফিনল্যান্ডে শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম সম্পন্ন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সুযোগ ও সুবিধা উপলব্ধ। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে স্কুল খোলা থাকে এবং স্বাস্থ্য ও খাদ্য পরিষেবা সম্পর্কে কোনও খরচ নেই। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করা হয় খুবই সুষ্ঠু এবং সম্পূর্ণরূপে মৌলিক শিক্ষার উপর ভিত্তি করা হয়। এছাড়াও, পরিবেশ, পরিবার এবং সামাজিক সংস্থাকে ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থার অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।

২. সিঙ্গাপুর:

সিঙ্গাপুর একটি অন্যতম উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পন্ন দেশ। সিঙ্গাপুরে সরকার শিক্ষায় বেশি মাত্রায় বিনিয়োগ করে এবং প্রযুক্তির নতুনত্বের ব্যবহার করে আধুনিক শিক্ষার দিকে গড়ে তোলে। উচ্চ মানের শিক্ষা সিঙ্গাপুরের শিক্ষার্থীদের জন্য অবিভাজ্য অধিকার হিসাবে গণ্য। সিঙ্গাপুরে সক্ষম শিক্ষকদের সুবিধায় সরকার নিয়মিত পেশাদার প্রশিক্ষণ ও উন্নতি প্রদান করে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন প্রয়োগশীল এবং আকর্ষণীয় শিক্ষাপ্রণালী ব্যবহার করে যা তাদের সৃজনশীলতা, সমস্যানুসার চিন্তা করার দক্ষতা এবং সমস্যাগুলির সমাধানে তাদের কার্যকলাপের দক্ষতা বাড়ায়। এছাড়াও, সিঙ্গাপুরে পরিবেশের সচেতনতা, সামাজিক সংস্থা এবং পরিবারের ভূমিকা শিক্ষার অংশ হিসাবে প্রশংসা পায়।

৩. কানাডা:

কানাডা উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার জন্য পরিচিত। কানাডার শিক্ষা পদ্ধতিগুলি সম্পূর্ণরূপে সম্প্রসারিত হয়েছে এবং এটি শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে তাদেরকে উদ্বুদ্ধকরে । কানাডায় শিক্ষার্থীদেরকে মনোযোগী রাখতে শিক্ষকদের নিয়মিত পরামর্শ এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
কানাডায় শিক্ষাব্যবস্থা প্রযুক্তিগত উন্নতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একটি আনন্দময় অভিজ্ঞতা দেয়। শিক্ষা পদ্ধতিটি ব্যক্তিগত আগ্রহ অনুযায়ী কাস্টমাইজ করা হয় যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রতিভা ও আগ্রহের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হয়। কানাডা শিক্ষা পদ্ধতিগুলি তথ্য-যোগাযোগ-প্রযুক্তি, গবেষণা এবং বিজ্ঞানের প্রযুক্তিগত প্রগতির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। এছাড়াও, কানাডায় শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য, উপস্থিতি, সামাজিক ও নৈতিক বিকাশের জন্য পরিশ্রম করা হয়। এই পরিশ্রমে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা এবং সামাজিক দক্ষতা বাড়ায়।

৪. সুইডেন:

সুইডেন একটি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পন্ন দেশ। সুইডেনের শিক্ষা পদ্ধতি প্রযুক্তিগত এবং সামাজিক উন্নয়নের উপর ভিত্তি করে উন্নত করা হয়েছে। সুইডেনে বিশ্বকে একটি ব্যাপক পরিবর্তনশীল সমাজের অংশ হিসাবে বিবেচনা করার শিক্ষা দেওয়া হয়। পরিবেশের সচেতনতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, গবেষণায় ব্যক্তিগত অবদান ইত্যাদি সুইডেনের শিক্ষার্থীদের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুইডেনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি মানবিক বিকাশ ও বিচারশীলতার উন্নতির প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত।

৫. জাপান:

জাপান হল আরেকটি অন্যতম উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পন্ন দেশ। জাপানে শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিক এবং তথ্যপ্রযুক্তিগত বিপ্লব ভীষণভাবে উল্লেখযোগ্য । শিক্ষা পদ্ধতিটি শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূর্ণ চিন্তা, উদ্ভাবন ও নতুন আবিষ্কারের জন্য উৎসাহ দেয়। জাপানের শিক্ষা পদ্ধতিগুলি গবেষণা, প্রযুক্তি এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত। জাপানে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল এবং প্রজ্ঞাভিত্তিক চিন্তাভাবনা করার সমর্থন প্রদান করা হয়। এছাড়াও, জাপানে সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার প্রভাবও বেশি উল্লেখযোগ্য। শিক্ষার্থীদেরকে সমস্যার মুখোমুখি হতে উৎসাহ দেয় এবং তাদেরকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মপ্রতিষ্ঠা বাড়াতে উৎসাহিত করে।

                  এই ৫টি দেশের উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে একটি সংহত তথ্য পরিবেশিত হল।  আর্টিকেল বিষয়ে আপনার মতামত কমেন্ট করে আমাদের জানান।  আশা করি এই তথ্য আপনার ভালো লেগেছে। এরকম আরো লেখা পেতে হলে আমাদের ব্লগ নিয়মিত ফলো করুন। আমাদের ফেসবুক পেজটি লাইক করে আমাদের সঙ্গে থাকার অনুরোধ রইল।

Article By – Ferdousi Manjira

Share
PreronaJibon