দ্রুত ছুটে চলেছে পৃথিবী , তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে মানুষের জীবনধারা। আর এই জীবনকে সফল ও সার্থক করে তুলতে অভিজ্ঞ সিনিয়র ব্যক্তি, অভিভাবকদের কাছে শোনা কতগুলো সিদ্ধান্ত আজ প্রবাদ বাক্যের মত হয়ে উঠেছে। যার ফলে শুরু হয়ে যায় সফল হবার জন্য জন্য ইঁদুর দৌড়। কিন্তু এই ইঁদুর দৌড়ের শেষ কোথায় ? তাই আজকের মানুষ সেই সিদ্ধান্তগুলো মানে সেই আপ্তবাক্যগুলো পাল্টে নিজের মত করে বাঁচতে শিখেছে। কি সেইসব সিদ্ধান্ত , চলো চট করে দেখে নিই।
তুমি জন্মেছ গরীব হয়ে, কিন্তু গরীব থেকো না ধনী হও। ধনী হও পরবর্তী প্রজন্মকে সুখে রাখার জন্য। কিন্তু জীবনকে সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে তুলতে হলে ধন-ই একমাত্র বিষয় নয়। তাই ‘ধনী হও’ কথাটি বদলে লিখে নাও- ‘তা-ই হও, – যা তোমাকে সুখী রাখবে।’
কথায় বলে , ‘বয়স গেলে বিয়া আর সাজ গেলে দিয়া।’ অর্থাৎ জীবনের ক্ষেত্রে যে অবস্থাতেই থাকো না কেন বিয়ের বয়সটা নির্দিষ্ট করে ফেলার বোকামিটা অনেক পুরনো ধারনা। তাই ‘বিয়ে করো ত্রিশের আগে’-এই বাক্যটিকে বদলে লিখে নাও- “বিয়ে করো তখন-ই, যখন তুমি প্রস্তুত।”
যেখানেই জব করো, যতদিনই বিজনেস করো কিন্তু তুমি তখনই অবসর গ্রহণ করবে যখন তোমার অনেক ব্যাংক ব্যালান্স থাকবে । বন্ধুরা এরকম ধারণা যদি মনে গেঁথে রেখে দাও তাহলে সেটাকে আজকেই বদলে ফেলো আর হয়ে উঠো সকলের প্রিয় অভিজ্ঞ পরামর্শদাতা এবং আত্মতৃপ্ত সুখী মানুষ। তাহলে “অবসর নাও অনেক অর্থ সঞ্চয় করে”- বাক্যটির বদলে লিখে নাও “অবসর নাও অনেক স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে। “
সুন্দরের প্রেমে কে না পড়ে ? কিন্তু স্মার্ট বন্ধুরা নিশ্চয়ই জানো চকচক করলেই সোনা হয় না। অর্থাৎ সুন্দরের পেছনে ছুটে কত শত জীবনই না নষ্ট হয়েছে মানুষের। তাই ‘সুন্দরের প্রেমে পড়ো’- এই বস্তাপচা কথাটি পাল্টে তোমার জীবনে এক্ষুনি লিখে নাও- “প্রেমে পড়ো তোমার নিজের বিস্ময়কর প্রতিভা ও ক্ষমতার ।”
‘তোমার জীবনের স্মরণীয় দিন’ স্কুল জীবনে এই রচনাটি মনে আছে ? তাতে কত কত স্মরণীয় দিন ও মুহূর্ত খুঁজতে হয়েছে আমাদের ! কিন্তু ছাত্রজীবনের হৈ-চৈ খেলাধূলা দুষ্টুমি ভরা মুহূর্তগুলির কোনোটিকে কি কম স্মরণীয় মনে হয়েছে ? আসলে বিশেষ উদযাপিত মুহূর্তগুলোতে খুশি হব , আর তার বিপরীতে সাধারণ মুহূর্তগুলিকে দুঃখের ভাববো- এমন আনাড়ি মানুষ নিশ্চয়ই তুমি নও। তাই এখুনি ‘স্মরণীয় মুহূর্তে খুশি হও’ বাক্যটির বদলে লিখে নাও “ছোটো ছোটো বিষয়ে খুশি হও। “
বন্ধু বাড়াও জীবনকে বড় করো এরকম হাস্যকর এক প্রতিযোগিতায় আমরা ফ্রেন্ডলিস্টকে বড়ো করতেই থাকি। কিন্তু ওটা লিস্ট মাত্র- বন্ধুত্ব সেখানে থাকে না। কাজেই তোমার মত স্মার্ট পার্সোনালিটির মানুষের জন্য ‘অনেক বন্ধু বানাও’ কথাটি চলবে না; এই কথাটি পাল্টে দ্রুত লিখে ফেলো-“বন্ধুর সংখ্যা কমাও কিন্তু বন্ধুত্বের যোগাযোগ বাড়াও।”
মানুষ তো ভালোবাসার জন্য পাগল। প্রত্যাশার এক একটা গামলা নিয়ে বসে থাকে মানুষ ভালোবাসার মানুষের জন্য। চারিদিকে হাজারো স্ট্যাটাসে ভরে ভরে যায়- ‘তুই অপরাধী’, ‘তুই বেইমান’, ‘মানুষ বড় স্বার্থপর’ ইত্যাদি ইত্যাদি । সত্যি-ই কি বন্ধু একবার ভেবে দেখেছো ভালবাসা-য় এত পাওয়ার ইচ্ছা কেন ? এটা স্বার্থপরতা নয় তো ! আর এই পাওয়ার ইচ্ছেতেই তো আমরা মানুষ বদলে বদলে খুঁজতে থাকি এমন একজনকে যে তোমাকে সত্যি ভালোবাসবে , অন্যদের থেকে বেশি কেয়ার করবে। দুঃখটার শুরু এখানেই। এই ব্যাকডেটেড কনসেপ্ট তোমার জন্য নয়। কাজেই “এমন একজনকে খোঁজো যে তোমায় ভালোবাসে” এই বাক্যটাকে ডিলিট করে দিয়ে ঝটপট লিখে ফেলো “নিজেকে খোঁজা এবং নিজেকে ভালোবাসো।”
আশা করি , বন্ধুরা উপরিলিখিত সাতটি ফ্যাকাসে সিদ্ধান্ত বদলে নিয়ে জীবনে রঙিন রামধনু তৈরি করতে পারবে। আমাদের সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হতে ফেসবুক পেজটিকে লাইক করো আর ইউটিউব চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখো। সেই সঙ্গে শেয়ার করো তোমার খু-উ-ব কাছের বন্ধুকে । ভালো থেকো।