ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়ার উপায়
ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ পাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানার আগে আমাদের ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে একটা বেসিক নলেজ থাকা দরকার। যদি তুমি এই আর্টিকেলটিতে পৌছে থাকো তাহলে ধরে নেওয়া যায় যে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে তোমার একটা বেসিক নলেজ আছে, তবুও সংক্ষেপে কিছুটা জেনে নেওয়া যাক ফ্রিল্যান্সিং আসলে কি।
ফ্রিল্যান্সার তাদের বলাহয় যারা কোনো একটি নির্দিষ্ট কম্পানি বা সংগঠনের হয়ে কাজ করেনা বরং বিভিন্ন কম্পানির সাথে চুক্তিভিত্তিক প্রজেক্টে কাজ করে নির্দষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে।
একটু সহজ করে বুঝতে গেলে ধরেনাও যে তোমার একটি স্কিল আছে এবং সেটা হলো লোগো ডিজাইনিং, এবার এই স্কিলের ভিত্তিতে তুমি কোন কম্পানিতে চাকরি করতে পারো, অর্থাৎ নির্দিষ্ট মাসিক বেতনের বিনিময়ে শুধুমাত্র সেই কম্পানির হয়ে কাজ করবে। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং হলো সেই একই স্কিল ব্যবহার করে তুমি যেকোনো কম্পানির (যাদের লোগো ডিজাইন কাজ দরকার) সাথে যোগাযোগ করতে পারো এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই কাজটি করে দিতে চুক্তিবদ্ধ হও। কাজের শেষে তুমি তোমার কাজটি সাবমিট করবে এবং কম্পানির বা ক্লাইন্টের সেটা পছন্দ হয়ে গেলে সে তোমাকে পেমেন্ট করবে।
ফ্রিল্যান্সিংএ নির্দিষ্ট কম্পানির সাথে দীর্ঘ সময়ের কোনো চুক্তি থাকেনা এবং তাদেরও কোনো মাসিক বেতন দিতে হয়না ফ্রিল্যান্সারকে, শুধুমাত্র প্রজেক্ট হিসেবে নর্ধারিত টাকা দিতে হয়।
আশাকরি ফ্রিল্যান্সিং কি এবং এখানে কিভাবে কাজ করতে হয় সেই সম্পর্কে একটা ধারণা তোমাদের দিতে পারলাম, তাহলে এবার আসি আমাদের লেখার মূল বিষয়ে – ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ কিভাবে পাবো ?
ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ পাওয়ার মূলত দুটো রাস্তা আছে, অফলাইন এবং অনলাইন। প্রথমে অফলাইন পদ্ধতিটি দেখেনেই।
অফলাইন হোক বা অনলাইন দুই ক্ষেত্রেই ক্লায়েন্ট খোঁজার আগে তোমাকে তোমার স্কিল সম্পর্কে সচেতন এবং নিজের কাজের ওপর বিশ্বাসী হতে হবে, কারন যখনই কেউ তোমার কাজের বিনিময়ে তোমাকে টাকা দেবে তখন তোমার থেকে বেস্ট টাই চাইবে।
তোমার স্কিলের ওপর নির্ভর করবে তুমি কোথায় কোথায় কাজ খুঁজবে। একটি উদাহরণস্বরূপ আমি ধরে নিচ্ছি তোমার স্কিল হলো – ওয়েব ডেভলপমেন্ট অর্থাৎ তুমি যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট বানাতে পারো। এবার তোমাকে নিজের আশেপাশের বিভিন্ন ছোট এবং বড়ো দোকান বা সংস্থাগুলিতে যোগাযোগ করতে হবে এবং তাদের বোঝাতে হবে যে কেন তাদের ব্যবসার উন্নতির জন্য ওয়েবসাইট থাকাটা আবশ্যক।
এই কাজে হয়তো প্রথমে অনেকেই মুখের ওপর না করে দেবে তবে হাল ছাড়লে চলবে না, এমন ভাবে তাদের কাছে বিষয়টা উপস্থাপন করতে হবে যাতে ওয়েবসাইট বানানোর প্রয়োজন তোমার থেকে তাদের মাথায় বেশি দাগ কাটে।
এক্ষেত্রে কিছুটা এডভেন্টেজ পাওয়ার জন্য যেটা করবে সেটা হলো – ক্লায়েন্টের কাছে যাবার আগে নিজে কিছু কম্পানি বা ছোট ব্যবসায়ীর একটা কেস স্টাডি তৈরি করো যেখানে ওয়েবসাইট বানানোর মাধ্যমে তাদের ব্যবসার বিশাল উন্নতি হয়েছে, এতে তোমার কাস্টমার পাওয়ার সম্ভাবনা আগের থেকে ৫০% এরও বেশি বেড়ে যাবে।
বর্তমানের ডিজিটাল দুনিয়ায় বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ অনলাইনেই হয়ে থাকে। অনলাইনেও ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়ার দুটো পদ্ধতি আছে।
প্রথমত অফলাইনের মতন অনলাইনেও তুমি নিজে ক্লায়েন্টকে যোগাযোগ করতে পারো, অর্থাৎ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রূপের মাধ্যমে অথবা কম্পানীকে ইমেল করে ইত্যাদি।
তবে অনলাইনে কাজ পাওয়ার সবথেকে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলিতে নিজের প্রোফাইল ক্রিয়েট করা। এই ধরনের সাইটগুলিতে সবসময় কাজের চাহিদাসম্পন্ন ক্লায়েন্টরা প্রয়োজনমতন ফ্রিল্যান্সারের খোঁজে থাকে।
এই পোর্টালগুলিতে প্রোফাইল বানানোর সময় আগে থেকে তোমার করা কিছু কাজ নিজের একাউন্টে শো করতে পারো এতে যে ব্যক্তি কাজ করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সার খুঁজছে তার তোমার প্রতি বিশ্বাস বাড়বে এবং তোমার কাজ পাওয়ার চান্স অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
আরও পড়ুন : ফ্রিল্যান্সিং কি ?
আমি এখানে এমন ৫ টি সাইটের উল্লেখ করছি যেখানে আপনি যেকোনো স্কিল রিলেটেড কাজ পেয়ে যাবেন। এছাড়াও অনেক ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে যার মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট স্কিল রিলেটেড সাইটও রয়েছে। পরবর্তী কোনো লেখায় সেগুলি নিয়ে আলোচনা করবো।
এই সাইটগুলিতে কাজ পাওয়ার ওপর বিস্তারিত লেখা পেতে চাইলে আমাদের কমেন্টবক্সে জানাও। ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড কি ধরনের লেখা পেতে চাও তাও আমাদের জানাতে পারো।
ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ পাওয়ার উপায় নিয়ে আমাদের লেখাটি কেমন লাগলো তা কমেন্টবক্সে জানাও, ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। এই ধরনের লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকো।