মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এর বিখ্যাত উক্তি ও বাণীসমূহ
মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে আমেরিকায় কালো মানুষদের প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন যিনি তিনি হলেন মার্টিন লুথার কিং বা মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র। এই বিখ্যাত মানুষটি জন্মগ্রহন করছিলেন ১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি জর্জিয়ার আটলান্টায়। তাঁর বাবা মার্টিন লুথার কিং সিনিয়র, মা অ্যালবার্টা উইলিয়াম কিং। জন্মের সময় তাঁর নাম রাখা হয়েছিল মাইকেল লুথার কিং। পরবর্তীকালে তাঁর কিশোর বয়সে এই নাম পাল্টে তিনি নিজেই বাবার নামের অনুসারে নতুন নাম করেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। তিনি ১৯৪৮ সালে মোরহাউজ কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানের ওপর স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৫৫ সালে তিনি বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসফি ডিগ্রি লাভ করেন। মূলত ১৯৫৫ সালের ডিসেম্বর মাসের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁর আনুষ্ঠানিক সিভিল রাইটস মুভমেন্ট শুরু হয়।
১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিঙ্কন মেমোরিয়ালের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে তিনি একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। সেই বিখ্যাত ভাষণটির শিরোনাম ছিল ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম বলে বিবেচিত হয়।মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে মার্টিন লুথার কিং নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৬৮ সালের ৪ই এপ্রিল শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থী আততায়ীর গুলিতে নিহত হন আধুনিক বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম এই নেতা ও বক্তা।
বিশ্বনন্দিত এবং অসাম্যের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা মানুষটি অর্থাৎ মার্টিন লুথার কিং এর বাঙময় হয়ে ওঠা আদর্শের প্রচারক উক্তি গুলি তাই আজও মানুষের ভেতরে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে । এই কারণে তার উক্তিগুলি আমাদের উজ্জীবিত রাখার জন্য আবশ্যক এক সম্পদ রূপে পরিগণিত । তাহলে এসো বন্ধুরা আজ জেনে নিই মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র -এর বিখ্যাত উক্তি বাণীসমূহ-
১.”যদি উড়তে না পার, তবে দৌড়াও; যদি দৌড়াতে না পার, তবে হাঁটো; হাঁটতে না পারলে হামাগুড়ি দাও। যে অবস্থাতেই থাকো, সামনে চলা বন্ধ করবে না।”
২.”যতক্ষণ না একজন মানুষ জানছে সে কিসের জন্য মরতে রাজি, ততক্ষণ সে জানবে না সে কিসের জন্য বেঁচে আছে।“
৩.”একজন মানুষ কতদিন বাঁচল, তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সে তার জীবনে কি করেছে।“
৪.”তোমার জীবনে তুমি যা নিয়েই কাজ কর, তাকে সবচেয়ে ভালোভাবে করার চেষ্টা কর। এমন ভাবে কাজ কর, যেন তোমার আগে-পরে কেউ এতটা ভালো করে করতে না পারে।“
৫.”সবাই বিখ্যাত হতে পারবে না। কিন্তু সবার পক্ষেই মহান হওয়া সম্ভব।“
৬.“তোমার স্বপ্ন পূরণে বাধা দেওয়ার অধিকার কোনও মানুষের নেই।“
৭.”যে তোমার ছোট উপকার করেছে তাকে এমন ভাবে কৃতজ্ঞতা জানাও যেন সে কেন তোমার আরও বড় উপকার করল না –এই ভেবে আফসোস করে।“
৮.”যদি কোনওকিছুর জন্য মরতে রাজি না থাকো, তবে তুমি বাঁচার উপযুক্ত নও।“
৯.”মানুষের জীবনে অনেক সময়ে এমন দিন আসে যখন তাকে এমন কিছু করতে হয় যা নিরাপদ নয়, যার কারণে অন্যরা তাকে অপছন্দ করবে। কিন্তু সঠিক কাজ করতে হলে তাকে তা করতেই হবে।“
১০.“একজন মানুষের জন্য এরচেয়ে খারাপ কিছুই হতে পারে না যে সে লম্বা একটি জীবন কাটালো, কিন্তু তেমন কোনও জ্ঞান অর্জন করতে পারলো না।”
১১.”বজ্র আঘাত করার পরেই শব্দ করে, আগে নয়।“
১২.”আমরা সবাই হয়তো আলাদা নৌকায় করে এখানে এসেছি, কিন্তু এখন আমরা একই জাহাজের যাত্রী।“
১৩.”মিথ্যার আয়ু খুবই অল্প।“
১৪.”যেসব কাজে মানুষের কল্যান হয়, তার প্রতিটিই সর্বোচ্চ যত্নের সাথে করা উচিৎ।“
১৫.”ভাইয়ের মত একসাথে বাঁচতে শিখতে হবে, না হলে নির্বোধের মত একসাথে ধ্বংস হতে হবে।“
১৬.”সবচেয়ে অন্ধকার রাতেই সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাগুলো দেখা যায়।”
১৮.”জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, ‘অন্যদের জন্য আমি কি করছি?“
১৯.”ভয়ের বন্যাকে ঠেকাতে আমাদের সাহসের বাঁধ তৈরী করতে হবে।“
২০.“প্রকৃত শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো মানুষকে গভীর ভাবে এবং নতুন ভাবে চিন্তা করতে শেখানো”
২১.”বুদ্ধি আর চরিত্রের মেলবন্ধনই প্রকৃত শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত।“
২২.”ভালোবাসা হল পৃথিবীর একমাত্র শক্তি, যা শত্রুকেও বন্ধু বানাতে পারে।“
২৩.”অন্ধকার অন্ধকারকে তাড়াতে পারে না; কেবল আলোই অন্ধকারকে তাড়াতে পারে। ঘৃণা দিয়ে ঘৃণা দূর করা যায় না। কেবল ভালোবাসা দিয়ে ঘৃণা দূর করা যায়।“
২৪.”যার দয়া দেখানোর ক্ষমতা নেই, সে ভালোবাসার ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত।“
২৫.”যেখানে গভীর ভালবাসা নেই সেখানে কোনও গভীর হতাশা থাকতে পারে না।“
২৬.”যে কেউ মহৎ হতে পারে। কারণ সেবা করার ক্ষমতা সবারই আছে। মানুষের সেবা করতে তোমার কোনও কলেজ ডিগ্রী দরকার নেই। মানুষের সেবা করার জন্য ব্যকরণ শেখার দরকার নেই। তোমার শুধু একটি মহৎ হৃদয় আর ভালোবাসায় পূর্ণ আত্মা থাকতে হবে।”
২৭.”আমি বিশ্বাস করি নিরস্ত্র সত্য আর নি:স্বার্থ ভালোবাসই দিনশেষে জয়ী হয়।এই কারণেই, সত্য সাময়িক ভাবে পরাজিত হলেও সে খারাপ ও মিথ্যার চেয়ে শক্তিশালী।“
২৮.”সবচেয়ে খারাপ মানুষগুলোর মাঝেও অল্পকিছু ভালো গুণ আছে। আবার সবচেয়ে ভালো মানুষগুলোর মাঝেও অল্প হলেও খারাপ গুণ আছে। এটা বুঝতে পারলে আমরা ঘৃণার পথে অনেক কম যাব।“
২৯.”একজন সত্যিকারের নেতা শুধু আদর্শ খোঁজে না, সে নতুন আদর্শের সৃষ্টি করে।“
৩০.”মানুষের জন্য সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া এবং বোকা সেজে থাকার চেয়ে বিপজ্জনক কিছু আর পৃথিবীতে নেই।“
৩১.”আমাদের জীবন সেখানেই শেষ হওয়া শুরু করে, যেখান থেকে আমরা সত্যের ব্যাপারে চুপ হয়ে যাই।“
৩২.”আমরা ইতিহাসের নির্মাতা নই। আমরা ইতিহাস দ্বারা তৈরি। “
৩৩.”সময়কে অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করতে হবে। কারণ সঠিক কাজ করলেই সময় সবচেয়ে ভালো ফল দেবে।“
৩৪.”সবকিছুর শেষে আমরা আমাদের শত্রুদের বাক্য মনে রাখবো না, কিন্তু বন্ধুর নীরবতা মনে রাখবো।“
৩৫.”পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যত বড় অর্জন হয়েছে, তার পেছেনে আশা ছিল সবচেয়ে বড় শক্তি।“
৩৬.”যদি তোমার সামনে হতাশার কালো পাহাড় এসে দাঁড়ায়, তুমি তাতে আশার সুড়ঙ্গ কাটতে শুরু করো।“
৩৭.”কেবল কারও কোনো ক্ষতি করলেই তুমি তার অপছন্দের পাত্র হবে, তা নয়। অপছন্দের ব্যাপারটা আসে ঈর্ষা কাতরতা থেকে। মানুষের সহজাত চরিত্রেই এই অনুভূতির প্রভাব আছে।“
৩৮.”আমরা আমাদের সমস্ত অধিকার চাই । আর তা এখানেই চাই এবং এখুনি চাই।“
৩৯. “কোথাও অন্যায় ঘটলে তা আসলে সর্বত্র ন্যায় বিচারের জন্যই হুমকি হয়ে ওঠে।“
৪০.”আমাদের সর্বদা চেষ্টা করা উচিত যেন আমাদের সৃজনশীল প্রতিবাদ অবক্ষয়ের মাধ্যমে সহিংস আন্দোলনের রূপ না নেয়।“
৪১.”ক্ষমা একটি সাময়িক কাজ নয়; এটি একটি ধ্রুবক মনোভাব।“
আমাদের লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। এই ধরনের লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজটিতে যুক্ত থাকো।