ভ্রমণ থেকে পাওয়া ৯ টি জীবন শিক্ষা
আদিম মানুষের মধ্যেই ছিল যাযাবর বৃত্তি। আজও মানুষ ভ্রমণ করতে ভালোবাসে। বাঙালি জীবনের একটি অঙ্গই হলো ভ্রমণ।
কবি নজরুল লিখেছেন ,
থাকব নাকো বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগৎটাকে।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন
কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা।
আমাদের ইচ্ছে করে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াই। রোমাঞ্চ ও নতুনের আস্বাদ গ্রহণের ইচ্ছা বাঙালির চিরন্তন। তাই আধুনিক গবেষণায় উঠে এসেছে ভ্রমণের অনেকগুলি কার্যকারিতা। সেগুলি হলো –
১. ভ্রমণ আমাদের বুদ্ধির তীক্ষ্নতা বাড়ায় :
খোলামেলা পরিবেশ আমাদের বুদ্ধির তীক্ষ্নতা অনেক গুন বাড়িয়ে দেয় যা চার দেওয়ালের আবদ্ধ পরিবেশে সম্ভব নয়। Environmental Psychology Researchers এর রিপোর্ট অনুযায়ী একজন মানুষ যে মাত্র ৪০ সেকেন্ডের জন্য একটি প্রাকৃতিক দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকে সে তার পরবর্তী কাজে ভালো ফল করে।
২. ভ্রমণ মানবিকতা ও উদারতা বাড়ায় :
বিভিন্ন্ মানুষ ও বিভিন্ন আর্থ সামাজিক পরিবেশ এবং অন্যের সাংস্কৃতিক পরিবেশ থেকে মানুষের উদার মানসিকতা তৈরী হয়। “নানা জাতি নানা মত নানা পরিধান” এর সঙ্গে পরিচিতি ঘটলে মানবিকতা বোধ গড়ে ওঠে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভ্রমণ অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাদের মধ্যে অন্য ধর্ম, সংস্কৃতি ও মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা বোধ গড়ে ওঠে।
৩. ভ্রমণ শিক্ষায় আগ্রহী করে :
যে কোনো নতুনত্ত্ব মানুষের কৌতুহল বাড়িয়ে দেয়। আর এই কৌতুহল বা ঔৎসুক্যই শেখার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। আর নতুন নতুন জায়গায় ভ্রমণ তাই মানুষকে প্রকৃতপক্ষ্যে শিক্ষায় উৎসাহী করে তোলে।
৪. ভ্রমণ সৃজনশীলতা বাড়ায় :
মানুষের মনের ভেতরে থাকা সৃজনশীলতাকে উস্কে দেয় ভ্রমণ। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য নানা উপায় অবলম্বন করে থাকে। তা দেখে ভেতরের শিল্পী মনে চাপ পড়ায় নতুন সৃষ্টির বাসনা জেগে ওঠে।
৫. ভ্রমণ জীবনবোধ তৈরী করে :
অজানা অচেনা পরিবেশে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা যায়। ফলে গন্ডীবদ্ধ জীবনে নিজের জীবনের অবস্থান সুস্পষ্ঠ হয়না। তাই দেখাযায় ভ্রমণের ফলে আত্ম-জীবন, বিশ্ব-জীবন উপলব্ধি করার সুযোগ তৈরী হয়। তাই বলা হয় ভ্রমণ মানুষের জীবনবোধ জাগ্রত করে।
৬. ভ্রমণ মানুষকে খুশি রাখে :
প্রতিটি মানুষের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এক অনুসন্ধিৎসু শিশু সত্তা। নতুনের আনন্দ মানুষের স্বভাবের অঙ্গ। তাই দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের মাধ্যমে বিমর্ষ ভাব কেটে যায় আর মন খুশিতে ভরে ওঠে।
৭. ভ্রমণ মানুষের ধৈর্য বাড়ায় :
অজানা অচেনা পরিবেশে নিজের প্রয়োজনের উপাদান জোগাড় করতে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়। সেখানে নিজের বাড়ির মতন রাগ দেখানোর উপায় থাকে না। খুব সত্যি কথা ইটা যে ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষের ধৈর্য শক্তি বেড়ে যায়।
৮. ভ্রমণ সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে :
নানা দেশে নানা ভাষার ভিড়ে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়। চরম লাজুকও সেখানে বাঙময় হয়ে ওঠে। বিভিন্ন ভাষা, পেশা, সামাজিক অবস্থানের মানুষের সঙ্গে পরিচিতি হবার সঙ্গে সঙ্গেই সামাজিক দক্ষতা বেড়ে উঠতে থাকে। এমনকি যাত্রাকালে সহযাত্রীদের মধ্যেও সদ্ভাব গড়ে ওঠে।
৯. ভ্রমণ মানসিক চাপ কমায় :
আগে মানুষের অসুখ বিসুখ হলে ডাক্তার “চেঞ্জে” যাবার বিধান দিতেন। এর মূল কারন হলো মানসিক প্রশান্তির প্রয়োজনীয়তা। মন খুশি হবার সাথে সাথে প্রতিদিনের জীবনের মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায় ভ্রমণের সাথে সাথে।
লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। আর এইধরনের লেখার আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকো।
daruun….
Thank you for your support.