গ্রিন টি এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ,ভিটামিন এ ,ভিটামিন বি ,বি৫, ডি ,ই ,সি ,ই ,এইচ সেলেনিয়াম ,ক্রোমিয়াম , জিংক ,ম্যাঙ্গানিজ ও সামান্য ক্যাফেইন। গ্রিন টির উপকারিতা অনেক। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ,উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্রণে সাহায্য করে ,ওজন কমাতে সাহায্য করে ,ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ,মস্তিস্ককে উদ্দীপ্ত করে। এছাড়া ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষার্থে গ্রিন টির জুড়ি মেলা ভার। গ্রিন টি বার্ধক্য এবং কপালের বলিরেখা থেকে ত্বককে রক্ষা করে ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ করে। তাহলে আজ জেনে নেওয়া যাক গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা –
গ্রিন টি হজম প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। গ্রিন টি পলিফেনল শরীরের ফ্যাট অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে আরো কার্যকর করে খাবার থেকে ক্যালোরি তৈরী প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এছাড়া গ্রিন টিতে উপস্থিত ক্যাটেচিন পেটের মেদ ঝরাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে , এটি একদিনে ৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করে। তার মানে নিয়মিত গ্রিন টি পানের মাধ্যমে বছরে ৭ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব।
গ্রিন টি শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টরেল কমিয়ে আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখতে ও হার্টকে স্ট্রোকের হাত থেকে বাঁচাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা মনে করেন ,গ্রিন টি শরীরের প্রতিটি শিরায় কাজ করে। ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। তাই কোনো কারণে রক্ত চাপে পরিবর্তন হলেও কোনো ধরণের ক্ষতি করে না। তাছাড়া গ্রিন টি রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
গ্রিন টি গ্লুকোজ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে , যা প্রত্যক্ষভাবেে নিয়ন্ত্রণ করে গ্রিন টি। তাই গ্রিন টি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেক সহায়ক।
দাঁত ভালো রাখতে গ্রীন টি নিয়মিত পান করা উচিত। কারণ এতে ‘ ক্যাটেকাইন ‘ নামক একপ্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মুখের ভিতরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে। যার ফলে গলায় সংক্রমণ সহ দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ওরাল ব্যাক্টেরিয়ার ধ্বংস করে ডেন্টাল ক্যাভেটিস প্রতিরোধ করে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে গ্রিন টি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
গ্রিন টি অবসাদ ও ডিপ্রেশন কমাতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। চা পাতায় থাকে ‘ থিয়ানিন ‘ নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড যা অবসাদ ও দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করে অবসাদ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
এতে রয়েছে এক ধরণের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা বার্ধক্য রোধ করে শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রাখে। ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে গ্রিন টি বেশ উপকারী। ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধেও এটি কার্যকরী। চোখের ফোলাভাব এবং ডার্ক সার্কেল কমাতে গ্রিন টির দুটি ব্যাগ ২ ঘন্টা ফ্রীজে রেখে , ঠান্ডা করে চোখ বন্ধ করে এর উপর ১০মিনিট রাখতে হবে। এছাড়া এটি ত্বকের রোদে পোড়াভাব কমাতে ও ব্ল্যাক হেডস দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গ্রিন টি ব্রণের সমস্যা দূর করতে ভীষণ ভাবে কার্যকরী।
গ্রিন টি ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত সব রকমের রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এটি ক্যান্সার এর ধ্বংসাত্মক সেলকে ধ্বংস করে। গবেষণায় দেখা গেছে অনেক রোগ বিস্তারেও বাধা দেয় গ্রিন টি।
গ্রিন টি স্মৃতি শক্তিবৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সহায়ক। গ্রিন টি শরীরের বিভিন্ন অংশকে ভেতর থেকে সতেজ করে তোলে এবং সেই সাথে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এটি মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনকেও ঠিক রাখে।
গ্রিন টি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে এবং শরীরে ক্যান্সারকে ছড়িয়ে পড়তে বাধা দেয়। গ্রিন টিতে উপস্থিত ‘ ইজিসিজ ‘ নামক উপাদানটি ক্যান্সার সেল কে ধ্বংস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এতে আছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি -অক্সিডেন্ট আর মিনারেলস যা শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখে।
গ্রিন টি স্বাস্থ্যের পক্ষে যতটা উপকারী ঠিক এর বিপরীতে গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম না জানলে এর থেকে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে ।
১. খাবার খাওয়ার ১ ঘন্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার ১ ঘন্টা পর গ্রিন টি পান করা উচিত। খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রিন টি পান করা উচিত নয়।
২. রাতে ঘুমোতে যাওয়ার ২ ঘন্টা আগে গ্রিন টি খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৩. ব্যায়াম করার আধা ঘন্টা আগে গ্রিন টি পান করলে শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি হয় এবং কার্যক্ষমতাও বাড়ে। ফলে ওজন ও মেদ কমাতে সাহায্য করে।