শিক্ষা ও জীবন

কমিউনিকেশন স্কিল বাড়ানোর ১০টি উপায়

3 Minute Read

কমিউনিকেশন স্কিল বাড়ানোর উপায় । যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ানোর উপায়

আদিম যুগে মানুষ যখন কথা পর্যন্ত বলতে পারত না তখনও তারা একে অপরের সাথে কমিউনিকেশন করত ইশারায় বা অন্যান্য উপায়ে । ধীরে ধীরে মানুষের পরিবর্তন হয়েছে এবং মানুষের কমিউনিকেশন স্কিল উন্নত থেকে উন্নততর হয়েছে ।

এখনো অনেক মানুষ আছে যারা অন্যান্য মানুষের সাথে ভালোভাবে কমিউনিকেশন তৈরি করতে পারে না । তাই মানুষের সাথে কমিউনিকেশন ঠিকভাবে না করতে পারলে যুগের সাথে চলা যায় না , পিছিয়ে পড়তে হয়। অনেক কঠিন কঠিন কাজ একটু মিষ্টি কথা দিয়েই সম্পন্ন করা যায় । যার যত কমিউনিকেশন স্কিল ভালো সে ততই যুগপোযোগী এবং সবার প্রিয় হয়ে ওঠে । ধরো তুমি কোনো ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছো কিংবা বিশেষ কোনো মিটিংয়ে যাচ্ছো সেখানে যদি তোমার কমিউনিকেশন স্কিল খারাপ হয় তাহলে তুমি অনেক পিছিয়ে পড়বে । কথায় আছে “First impression is the last impression” ।

তাই তোমার কমিউনিকেশন স্কিল আজ থেকেই উন্নত করো আর হয়ে ওঠো যুগপোযোগী , সকলের প্রিয় এবং জীবনে অর্জন করো তোমার সফলতা ।
এসো দেখে নিই কী কী উপায় অবলম্বন করে তুমি তোমার কমিউনিকেশন স্কিল বাড়াতে পারো —–

১) মনযোগ দিয়ে সামনের ব্যক্তির কথা শোনো :-

সবাই বলতে ভালোবাসে, কিন্তু কেউ সামনের ব্যক্তির কথা শুনতে চায়না । এটা একদম ঠিক নয় যদি অপর ব্যক্তির কথা না শোনো নিজেই বলে যাও তাহলে সামনের ব্যক্তির তোমার প্রতি এক বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হবে এবং তোমার প্রতি বিরক্তি তৈরি হবে । আর তুমি যদি সামনের ব্যক্তির কথা মনোযোগ সহকারে শোনো তাহলে সামনের ব্যক্তি তোমাকে পছন্দ করতে শুরু করবে এবং তোমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে।

২) কথা বলার সময় বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক রাখো :-

কথা বলার সময় তোমার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলে দেবে তোমার কমিউনিকেশন স্কিল কতটা ভালো । শুধু কথা বলার পাশাপাশি হাতের ভঙ্গিমা , আই কন্টাক্ট ও শরীরের বিভিন্ন ভঙ্গিমা তোমার কমিউনিকেশন স্কিলকে অনেকটাই উৎকৃষ্ট করে তুলবে । তাই কথা বলার পাশাপাশি সদার্থক বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আবশ্যিক।

৩) সামনের ব্যক্তির কথা যে তুমি শুনছো , কথার মাঝেই তার রেসপন্স করো :-

যখন তুমি সামনের কোনো ব্যক্তির কথা শুনছ তখন শুধুমাত্র কথা না শুনে শোনার পাশাপাশি মাঝে মাঝে হ্যাঁ, না বা মাথা নাড়িয়ে রেসপন্স করো। এতে সামনের উদ্দিষ্ট ব্যক্তির মনে হবে যে তুমি তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছো এবং তোমার প্রতি তার সদার্থক মনোভাব চলে আসবে । তোমাকে সে গুরুত্ব দিতে শুরু করবে।

৪) দ্রুত কথা না বলে ধীরে ধীরে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করো :-

যে কোনো কথাকে খুব দ্রুত না বলে সেটাকে একটু ধীরে ধীরে বুঝিয়ে বলতে শেখো । তাহলে সামনের ব্যক্তি তোমার কথা খুব ভালো বুঝতে পারবে এবং তোমার মধ্যে ইন্টারেস্ট খুঁজে পাবে । আর তুমি যদি কোনো কথা দ্রুত বলো তাহলে হয়তো তোমার কথা সে ভালোভাবে বুঝতে পারবে না অথবা ভুল বুঝবে , তাতে তোমার প্রতি তার ইন্টারেস্ট হারিয়ে যাবে এবং সে তোমাকে অ্যাভোয়েড করা শুরু করবে।

জেনে রাখুন : মানুষ চেনার ৬ টি লক্ষণ

৫) কথা বলার সময় হাসো :-

মন কেড়ে নেওয়ার জন্য একটা সুন্দর হাসিই যথেষ্ট । তাই বলে একজনের মন খারাপ , তার সামনে গিয়েও হাসাহাসি করলে হিতে বিপরীত হতে পারে । তবে অন্যান্য সময় কথা বলার মুহূর্তে যদি মুখের কোণে একটা হালকা হাসি নিয়ে কথা বলো — দেখবে তোমার প্রতি সামনের ব্যক্তির ইতিবাচক একটা অনুভুতি চলে আসবে। কমিউনিকেশন স্কিল বাড়ানোর উপায় টি আজই প্রয়োগ করে দেখতে পারো।

৬) টাইমিং বুঝে কথা বলো :-

আমাদের বেশিভাগ মানুষের কমিউনিকেশন স্কিল খারাপ , কেননা আমরা সঠিক সময় সঠিক কথা বলতে পারিনা । কখন কোন কথা বলতে হয় তা ভুলে যাই । ভুল যায়গায় ভুল সময়ে ভুল কথা বলে বসি । তাই কথা বলার সময় সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে সামনের ব্যক্তিটি কিরকম মুডে আছে তাকে ঠিক সেই রকম কথা বলতে হবে যাতে তোমার সাথে তার যোগাযোগ সুদৃঢ় হয়।

৭) কথা বলার সময় আওয়াজ ঠিকঠাক আছে কিনা দেখো :-

কথা বলার সময়ে লক্ষ্য করবে যে তোমার কথা ঠিক ঠাক আছে কিনা । মনে করো , তুমি একটা মিটিংয়ে বক্তার ভূমিকা পালন করছো , সেখানে যদি তুমি ধীরে ধীরে কথা বলো এবং তোমার কথা কেউ শুনতে না পারে তাহলে তোমার প্রতি শ্রোতাদের বিরূপ মনোভাব চলে আসবে । আবার যদি কোনো স্থানে আস্তে কথা বলা প্রয়োজন হয় সেখানে যদি জোরে কথা বলো সেটাও তোমার কমিউনিকেশন স্কিল খারাপ করবে । তাই সঠিক অবস্থানে সঠিক ভাবে কথা বলতে চেষ্টা করো।

জেনে নিন : চুমু খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা

৮) একটু খোলামেলা ভাবে মেশার চেষ্টা করো :-

যখন কারো সাথে মিশবে একটু খোলাখুলি ভাবে মেশো । সহজ কোনো কথাকে খুব ঘুরিয়ে পেচিয়ে না বলে সহজ কথাকে সহজভাবে উপস্থাপন করো । তুমি যদি সামনের ব্যক্তির সাথে সহজসরল এবং খোলামেলা ভাবে মেশো তাহলে সেই ব্যক্তিও তোমার সাথে খোলামেলা ভাবে মিশতে শুরু করবে।

৯) সামনের ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীল হও:-

যখন কারো সাথে কথা বলবে তখন সেই ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীল হও । উদ্দিষ্ট ব্যক্তির দুঃখে দুঃখ প্রকাশ করো এবং আনন্দের সময় আনন্দকে ভাগ করে নাও । এইভাবে দেখবে দুজনের মধ্যে কমিউনিকেশন সুদৃঢ় হবে ধীরে ধীরে।

১০) কোনো কথাকে যুক্তি ও উদাহরণ দিয়ে সামনের জনকে বোঝানোর চেষ্টা করো :-

মনি যখন কোনো কথা বলবে তখন তোমার কথা কেউ গুরুত্ব দেবে না , আবার তুমি যদি কোনো কথা যুক্তি ও উদাহরণ সহকারে উপস্থাপন করো তাহলে তোমার কথা মনোযোগ সহকারে শুনবে এবং তুমি সবার চোখে একদম আলাদা হবে।

তাহলে বন্ধুরা , আজ আমরা জানলাম কীভাবে নিজের কমিউনিকেশন স্কিল বাড়াতে পারি বা যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ানোর উপায়। এরকম আরো অনেক আর্টিকেল আমাদের ব্লগ এ রয়েছে – সেগুলোতে একবার চোখ বোলাতেই পারো। আর হ্যাঁ , আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক করে ফলো করতে ভুলো না যেন । কারণ তোমার জন্য আরো অনেক আর্টিকেল অপেক্ষায় থাকবে । খুব ভালো থেকো আর সুস্থ থেকো ।

This Article Is Written By

Nishith Kumar Sen
Writer

কবি – সম্পাদক “অন্বেষণ” পত্রিকা

আমি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র । আমি সুন্দর সুশীল এক সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি । আমি লিখতে ভালোবাসি ও কবিতা- গল্প -প্রবন্ধ পড়তে ভালোবাসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *