শরীর ও স্বাস্থ্য

হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ কী ? উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়

6 Minute Read

জীবন খুব দ্রুত ছুটে চলেছে । আমরা ক্রমশ ব্যস্ত হয়ে পড়ছি । মানুষে মানুষে সম্পর্কগুলো থিতিয়ে পড়ছে ক্রমশঃ। “পাশাপাশি বসে একসাথে দেখা /একসাথে নয় আসলে যে একা” । আর এই একাকীত্ব থেকেই বাড়ছে ডিপ্রেশন , নানারকম টেনশন , উড়ে যাচ্ছে ঘুম । এভাবেই শরীরে বাসা বাড়ছে সাইলেন্ট কিলার হাই ব্লাড প্রেসার । আসুন আজ আমরা জেনে নিই হাই ব্লাড প্রেসার কী? উচ্চরক্তচাপের কারণ, লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি সম্বন্ধে।

হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কী ?

হাইপারটেনশন বা হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ একটি জটিল দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) স্বাস্থ্যগত সমস্যা যার ফলে শরীরের রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। একে সাইলেন্ট কিলারও বলা হয়ে থাকে।

হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

সিস্টোলিক প্রেসার ও ডায়াস্টলিক প্রেসার কী ?

দু’টি মানের মাধ্যমে এই রক্তচাপ রেকর্ড করা হয় – যেটার সংখ্যা বেশি সেটাকে বলা হয় সিস্টোলিক প্রেশার, আর যেটার সংখ্যা কম সেটাকে বলা হয় ডায়াস্টলিক প্রেশার। প্রতিটি হৃৎস্পন্দন অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের সংকোচন ও সম্প্রসারণের সময় একবার সিস্টোলিক প্রেশার এবং একবার ডায়াস্টলিক প্রেশার হয়।

স্বাভাবিক অবস্থায় রক্ত চাপের পরিমাপ :-

একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ খানিকটা বাড়তে থাকে। তখন এই পরিমাপের থেকে আর একটু বেশি চাপকেও স্বাভাবিক বলে ধরা হয়।

কীভাবে বুঝবেন রক্তচাপ বেড়েছে :-

কারও ব্লাড প্রেশার রিডিং যদি ১৪০/৯০ বা এর চেয়েও বেশি হয়, তখন বুঝতে হবে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে। উপরের চাপ মানে সিস্টোলিক ১৪০-এর বেশি,নীচের রক্ত চাপ তথা ডায়াস্টোলিক ৯০-এর বেশি হয় তাহলে সেটি মুশকিল।এই অবস্থাটাকে হাই ব্লাড প্রেসার বলে।

লো ব্লাড প্রেসার বুঝবেন কীভাবে ?

রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ বা এর আশেপাশে থাকে, তাহলে তা লো ব্লাড প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয়।

কী কী কারণে উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায় ?

৯০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না, একে প্রাইমারি বা অ্যাসেনশিয়াল রক্তচাপ বলে। সাধারণত বয়স্ক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশি হয়ে থাকে। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বংশগত৷ তবে অনেকের ক্ষেত্রে জীবনযাপনের কারণেই উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায়৷ যেমন, ওবেসিটি বা ওজন বৃদ্ধি,বেশী লবন গ্রহণ,ওভার থিঙ্কিং, টেনশন, হতাশা, রাত্রি জাগরণ, অতিরিক্ত মদ্যপান,দৈনিক খাদ্য তালিকায় অনেক বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য থাকা,খাদ্য তালিকায় অধিক চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহন করলে,গর্ভধারণ অবস্থায় একলাম্পসিয়া ও প্রি এ্যাকলাম্পসিয়া হলে। এছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, এক নাগাড়ে পেন রিলিভার ট্যাবলেট খাওয়ার ফলেও এই প্রবণতা দেখা দেয়। এসব কারণে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ দেখা যায়৷

হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ বা উপসর্গ :-

উচ্চ রক্তচাপের একেবারে সুনির্দিষ্ট কোন লক্ষণ সেভাবে প্রকাশ পায় না। বিভিন্ন সময়ে মানুষের হাই প্রেসারের লক্ষণ কিছুটা দেখা যায়। আর এই লক্ষণ প্রতিটি মানুষের একই রকম নয়। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে।

বুক ধড়ফড় করা।
মনোযোগের অভাব।
ক্লান্তি।
হাঁপিয়ে ওঠা।
মাংসপেশীর দুর্বলতা।
পা ফোলা।
বুকব্যথা।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া।
প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করা।
মাথা গরম হয়ে যাওয়া এবং মাথা ঘোরানো।
ঘাড় ব্যথা করা
বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
অল্পতেই রেগে যাওয়া বা অস্থির হয়ে শরীর কাঁপতে থাকা
রাতে ভালো ঘুম না হওয়া
মাঝে মাঝে কানে শব্দ হওয়া
অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলা

কিডনিজনিত রোগ, কিছু হরমোনাল রোগ, কিছু রক্তনালির রোগ ইত্যাদি।

এসব লক্ষণ দেখা দিলে নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করতে এবং ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

উচ্চ রক্তচাপ হলে কী সমস্যা তৈরি হয় ?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যা জানাচ্ছে, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। বয়স ২০ থেকে ৩০-এর মধ্যে হলে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন। আর পঞ্চাশের কোঠায় বয়স হলে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন প্রতি ১০ জনে ৫ জন। বয়স ৭০ বা তার বেশি হলে প্রতি দুই জনের মধ্যে এক জনের উচ্চ রক্তচাপ থাকবে। উচ্চ রক্তচাপ হলে কঠিন কয়েকটি সমস্যা তৈরি হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গে জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদযন্ত্রের পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং এর ফলে দুর্বল হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করতে না পেরে ব্যক্তির হৃতপিণ্ড কাজ বন্ধ করতে পারে বা হার্ট ফেল করতে পারে। এছাড়া, এমন সময় রক্তনালীর দেয়াল সঙ্কুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও থাকে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, মস্তিষ্কে স্ট্রোক বা রক্তক্ষরণও হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।

উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হল, এই রোগের কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না। লক্ষণ না থাকলেও দেখা যায় শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে এবং রোগী হয়তো বুঝতেই পারেন না যে তার মারাত্মক শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত বয়স্ক মানুষের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বেশি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বয়স ৪০ হওয়ার পর থেকে কয়েক মাস অন্তর ব্লাড প্রেসার মাপা দরকার বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আর যারা দীর্ঘ দিন ধরে রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের প্রতি সপ্তাহে একবার প্রেসার মেপে দেখা উচিত।
বাড়িতেই রাখতে পারেন প্রেসার মাপার যন্ত্র। রক্তচাপ নির্ণয় করার যন্ত্রকে ইংরেজিতে বলা হয় স্ফিগমোম্যানোমিটার (sphygmomanometer)। বাজারে ডিজিটাল ও অ্যানালগ দুই ধরনের যন্ত্র পাওয়া যায়। এছাড়া একটি স্টেথেস্কোপও লাগবে। এছাড়া ঘরে বসেই আপনি অতি সহজেই মেপে দেখে নিতে পারেন অতি সরল ডিজিটাল স্ফিগমোম্যানমিটার দিয়ে । অনলাইনে অর্ডারও করতে পারেন । ডিজিটাল যন্ত্র যে সবসময় সঠিক পাঠ দেবে এমনটা বলা যায় না । তবে ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে । যেমন – পাঁচ-দশ মিনিট বিশ্রাম করার পর প্রেসার মাপতে হবে । চেয়ারে সোজা হয়ে বসে , হাতটি হৃৎপিণ্ডের সম উচ্চতায় রাখতে হবে । কাপটি কনুইয়ের একটু উপরে মাঝারি টাইট করে বাঁধতে হবে । এভাবে প্রেসার মাপলে অনেকটাই সঠিক রিডিং পাবেন ।

[ Chack Digital BP Monitor on Amazon ]

তবে একবার রক্তচাপ বেশি দেখা গেলেই যে কারও উচ্চ রক্তচাপ আছে, সেটা বলা যাবে না। পর পর তিন মাস যদি কারও উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায়, তখনই বলা যাবে যে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায় :-

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের কয়েকটি উপায় নীচে আলোচনা করা হল :-

১.লবণ খাওয়া কমাতে হবে :-

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে প্রত্যেক দিন ৫ গ্রামের বেশি নুন খাওয়া উচিত নয়। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রথমেই লবণ খাওয়া কমাতে হবে। কাঁচা লবণ খাওয়া যাবে না। আর রান্নাতেও যতটা সম্ভব লবণ কম দিন।কারণ অতিরিক্ত লবণ রক্তে মিশে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায় এবং দেহে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়।

২.অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে :-

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে উচ্চ রক্তচাপ অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। একবার লক্ষ্য অনুযায়ী ওজনে পৌঁছালে সীমিত আহার করা উচিত এবং ব্যায়াম অব্যাহত রাখতে হবে। ওষুধ খেয়ে ওজন কমানো বিপজ্জনক। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওজন কমানোর ওষুধ না খাওয়াই ভালো।

৩. রসুন খান :-

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমাতে সকালে খালি পেটে রোজ রসুন খান। যারা প্রতিদিন ৪৮০ থেকে ৯৬০ মিলিগ্রাম রসুন খান, তাদের রক্তচাপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। সবচেয়ে ভালো উপায় হলো প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে এক কোয়া করে রসুন খাওয়া। বলা হয়, রসুন উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। রসুনে রয়েছে প্রচুর সালফারে পূর্ণ অ্যালিসিন, ডায়াল্লিল ডি সালফাইডসহ আরো নানা উপাদান। এই দুই উপাদানই উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে। রসুনের সালফার রক্তনালিতে নাইট্রিক অক্সাইড উৎপন্ন করে, এতে রক্তনালির স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

৪. নিয়মিত ব্যায়াম :-

ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চা ও ব্যায়াম করা প্রয়োজন। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাঁদের প্রত্যেকদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট শরীরচর্চা করা আবশ্যিক তাতে রক্তচাপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ব্যায়ামের সময় হৃদপিণ্ড শক্ত হয় এবং পাম্প করতে চাপ কম লাগে। এটি আর্টারি থেকে প্রেশার কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপ কমায়।

৫. প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি খান :-

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে সবুজ শাকসবজি যেমন পালংশাক, কলমিশাক, মুলাশাক, পাটশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, শসা, মুলা, লাউ, মটরশুঁটি, ঢ্যাঁড়স,করলা,বেগুন, কুমড়া, বিনস,গাজর,লেবু,বিট ইত্যাদি। খাদ্যতালিকায় পটাশিয়াম–জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে পারলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যেমন- পালং শাকে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, আয়রনের মতো পুষ্টি উপাদান, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। শীতকালের সময় বিট খেতে পারেন। মরসুমি সব্জি হিসেবে বিট উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য খুব উপকারী। এই সব্জিতে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট রয়েছে, যার কারণে শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়।

৬. চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করুন :-

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। তবে শুধু খাবারের কোলেস্টেরলই রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ানোর জন্য দায়ী নয়। সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার যেমন- সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার যেমন- ঘি, মাখন, রেড মিট ইত্যাদির বদলে অসম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার যেমন- সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, জলপাইয়ের তেল, মাছ পর্যাপ্ত খাওয়া উচিত।

এছাড়া অতিরিক্ত কোলেস্টোরেল যুক্ত খাবার খাওয়ার কারণেও রক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। কারণ, রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টোরেল রক্তনালীর দেয়াল মোটা ও শক্ত করে ফেলে। এর ফলেও উচ্চ রক্তচাপ দেখা যেতে পারে।

৭. চিনি এবং রিফাইন্ড কার্বহাইড্রেড কম খান :-

চিনি ও রিফাইন্ড কার্বহাইড্রেডের সঙ্গে উচ্চরক্তচাপের সম্পর্ক রয়েছে। তাই যতটা সম্ভব রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলুন। ময়দা, চিনি, সাদা ভাত, কেক, প্যাটিস, বার্গার, সাদা পাঁউরুটির মতো খাবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। এমনি আটার রুটির বদলে জোয়ার, বাজরা, রাগির রুটি খেতে পারেন। সাধারণ ইডলি-ধোসার বদলে সুজি বা রাগির ইডলি খান। হোল-হুইট গ্রেনের আটা পাঁউরুটি খান। ওজন যত নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, তত রক্তচাপও কম থাকবে।

৮. মদ্যপান পরিহার করুন :-

অতিরিক্ত মদ্যপান রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। হালের গবেষণা বলছে অ্যালকোহল প্রায় ১৬ শতাংশ রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই মদ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে।

৯.ধূমপান ত্যাগ করুন :-

গবেষকরা রক্তচাপের সঙ্গেও ধূমপানের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। গবেষকদের মতে, যখন কেউ ধূমপান করেন, সিগারেটের নিকোটিন স্বল্পমেয়াদে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, ফলে ধমনী ও শিরার নানারকম রোগ-সহ হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।
এছাড়া ধূমপান করলে রক্তে উপকারী কোলেস্টেরল বা বেশি ঘনত্বের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়।

১০. ওষুধ চালিয়ে যাবেন :-

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনও ব্লাড প্রেসারের ওষুধ বন্ধ করা উচিত নয়। এমনকি প্রেসার নিয়ন্ত্রণসীমার মধ্যে থাকলেও। রোগীকে প্রেসারের ওষুধ দেওয়া হয় সেই ওষুধের কার্যক্ষমতার সময়সীমার ভিত্তিতে।

১১. মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা কম করা :-

মানসিক চাপ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুভাবেই রক্তচাপকে প্রভাবিত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে-রাগ, উত্তেজনা, ভীতি অথবা মানসিক চাপের কারণেও রক্তচাপ সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে। দীর্ঘসময় ধরে মানসিক চাপ অব্যাহত থাকলে দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা তৈরি হতে পারে। মানসিক চাপ কমাতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, ধ্যান, যোগব্যায়াম, ‘ডিপ ব্রিদিং’, শরীরচর্চা করলে চাপ কমে যাবে এবং উচ্চ রক্তচাপও অনেককটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

সতর্কতা : এই বিষয়গুলো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াও বিভিন্ন তথ্য থেকে সংগৃহীত । প্রত্যেকটি মানুষের শারীরিক ক্ষমতা ও ধরণ আলাদা । অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ, পথ্য ও নিয়মাবলি মানবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *