মোটিভেশন

ভয়কে জয় করতে চাও ? তাহলে তার মুখোমুখি হতে শেখো

2 Minute Read

” THE BEST WAY TO SOLVE A PROBLEM IS TO FACE IT “

অনেক সময় ছোট্ট একটা গল্প থেকে আমরা বৃহৎ কিছু শিখতে পারি । আজ আমরা সেরকমই একটা গল্প শুনবো যা আমাদের ভয়কে জয় করতে শেখাবে। গল্পের শেষ পর্যন্ত থেকো বন্ধুরা ।

একটি গ্রামের সকল গ্রামবাসীর মনে খুব দুঃখ ছিল। কারণ ওই গ্রামের শেষে একটি পাহাড়ের গুহায় থাকত এক রাক্ষস। বিশাল আকৃতির সে রাক্ষস শর্ত রেখেছিল প্রত্যেক পূর্ণিমায় গ্রামের সবচেয়ে শক্তিশালী যুবককে তার কাছে পাঠাতে হবে। রাক্ষসের সঙ্গে যদি সে হেরে যায় তবে সে ওই রাক্ষসের আহারে পরিণত হবে। আর তা না হলে গ্রাম শুদ্ধ মেরে ফেলবে।

খুব দুঃখ কষ্টে দু তিন সপ্তাহ পর যখনই পূর্ণিমা কাছে আসে সকলের মনেই আতঙ্ক ছড়ায়। এবার আরেকজন নবীন যুবকের পালা। গ্রামের মোড়লই ঠিক করে দেন ঐ পূর্ণিমায় কে যাবে রাক্ষসের পেটে। তাদের বিশ্বাস ছিল এতো বড় রাক্ষসের সঙ্গে একজন যুবক কখনোই লড়তে পারবে না – অর্থাৎ সে রাক্ষসের আহারেই পরিণত হবে। এই ভয় আর আতঙ্কের ফলে তরুণ যুবকেরাও বিনা যুদ্ধে রাক্ষসের আহারে পরিণত হতে লাগলো।

সেদিন ছিল পূর্ণিমা। গ্রামে কান্নার রোল উঠল আজ আবার একজন যুবকের পালা। এমন সময় জোৎস্না মাখা রাতে সেই গ্রামে একজন সাহসী যোদ্ধা ঘোড়ায় চড়ে গ্রামে প্রবেশ করলো। সে কান্নার কারণ জানতে চাইলে গ্রামবাসী সব খুলে বলল। সব শুনে সেই যোদ্ধা গ্রামের মোড়লকে অনুরোধ জানায় ” আমি কি আজ যুদ্ধ করতে পারি ? “- মোড়ল যোদ্ধার সাহস দেখে খুবই খুশি হলেন এবং পরক্ষণই বিমর্ষ হয়ে পড়েন এই ভেবে একজন অজ্ঞাত মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া ঠিক হল কিনা।

সেই ঘোড়সওয়ার যোদ্ধা খুব দ্রুত ঘোড়া ছুটিয়ে দিলেন সেই পাহাড়ের দিকে কিছুক্ষন যাবার পর দূর থেকে দেখতে পেলেন প্রায় ত্রিশ ফুট দীর্ঘ উঁচু এক রাক্ষস মূর্তিকে। সাহস করে ঘোড়ার গতি বাড়িয়ে দিলেন – এক হাতে ধারালো তলোয়ার নিয়ে ছুটতে ছুটতে দেখলেন রাক্ষসের বিরাট মূর্তি ছোট হয়ে গেছে প্রায় ২০ ফুট। যতই এগুতে লাগলেন দেখলেন রাক্ষসের বিরাট মূর্তি ক্রমশ ছোট হতে লাগলো। যেই একদম সামনে উপস্থিত হলেন দেখলেন সে বিশাল রাক্ষস আদৌ নয় – সে আসলে ৫ ফিট উচ্চতার একটা বুনিপ মাত্র। তাকে কোনো সুযোগ না দিয়ে তরবারির আঘাতে ধর থেকে মাথাটা আলাদা করে দিয়েই গ্রামের পথ ধরলেন।

বন্ধুরা এখানে আমরা দেখতে পাই গ্রামের মানুষ যা পারে নি সাহসী যোদ্ধা এক মুহূর্তে তা পারলেন। কি করে পারলেন ? সেটা বুঝতে হলে আগে জানতে হবে গ্রামের মানুষ কেন পারে নি ? একটাই কারণে পারে নি সেটা হল ভয়। এই ভয়ই অনেক মানুষকে জীবনে কোনো বাধাকে অতিক্রম করতে দেয় না। দূর থেকে যেসব সমস্যাকে অনেক বড় মনে হয় – সাহসের সঙ্গে তার মোকাবেলা করতে গেলেই দেখা যাবে যে সেটা ওই রাক্ষসের মতোই ক্রমশ ছোটো হতে শুরু করেছে।

মানুষের জীবনেও একটি বড় বাধা হল ভয় – এই ভয়ের কারণেই অনেক মানুষ তার জীবনে সফল হতে পারে না। পরীক্ষার্থীর কাছে ফেল করার ভয় , ব্যবসায়ীর কাছে লোকসানের ভয় , চাকুরী প্রার্থীর কাছে অ -মনোনীত হবার ভয় , কোনো বাধাকে জয় করবার ভয় মানুষকে তার কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছতেই দেয় না। বাকি জীবন তারা ঐ একই জায়গায় পড়ে থাকেন আর কপালের দোহাই দিয়ে আফসোস করেন শেষ বয়েসে – ‘ ইস ‘- আর ‘ যদি ‘ ই তাদের সম্বল হয়ে দাঁড়ায়।

লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। আর এইধরনের লেখার আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *