শরীর ও স্বাস্থ্য

যারা ধূম পান ত্যাগ করেছেন ,তারা কিভাবে সফল হয়েছেন |ধূম পান ত্যাগ করার উপায়

3 Minute Read

ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর , আর কতটা ক্ষতিকর এসব কথা বলার কোনো অপেক্ষা রাখে না । যারা ধূমপায়ী , তারা আদতে এই ব্যাপারে জ্ঞানপাপী । যাই হোক ধূমপান সদ্য ত্যাগ করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির কাছে শোনা অভিজ্ঞতা থেকে শেয়ার করছি।

সবার আগে, ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে যে যে বিষয়গুলো সামনে এসে পড়েছিল , তাদের কথা থেকে সেগুলি তুলে ধরি । তোমরাও দেখবে এই ধরণেরই বাধাগুলো সামনে আসবে। একবার দেখে নি :


১। ধূমপান করার পক্ষে একের পর এক যুক্তি(যেগুলি আদতেই কুযুক্তি ) তৈরি করা।


২। ধূমপায়ী বন্ধুদের উৎসাহ ও টিটকারি ।


৩। নির্দিষ্ট সময় অন্তর মৌতাঁত বা নেশা করার স্পৃহা ।


৪। ধূমপানের স্থানগুলো বা আড্ডাস্থলগুলো আহ্বান করতে থাকে।


৫। কাজের ফাঁকে একটু সময় পেলেই কি করি কি করি ভাব ।


৬। হতাশা ও সংসারের ঝামেলা থেকে বিরক্ত হয়ে নিজের জীবনকে মূল্যহীন মনে করা ।


৭। সর্বোপরি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণের অভাব। এটাই সবচেয়ে বড় বাধা । নিজের ইচ্ছেগুলোতে লাগাম দেয়ার ক্ষমতার ও সদিচ্ছার অভাব।

quit smoking

সত্যি বন্ধুরা , দেখবে এই সমস্যাগুলোই সামনে আসবে আর যুদ্ধে নেমেও হাল ছেড়ে দিলে নিজেকে পরাজিত সৈনিকের মতো মনে হবে । তবে মনের জোরে আমরা ধূমপান ছাড়ার মতো বিশ্ব জয়ের আনন্দে শামিল হতে পারি।

এবার জেনে নেই স্টেপগুলো কি কি ?

দেখো আমার মনে হয় খুব সহজেই বোঝা যাবে যে , যেকোনো সমস্যার মূলেই আছে তার সমাধান । আমরা যদি ঐ সমস্যাগুলোকে সামনে থেকে হঠিয়ে দিই তাহলেই কঠিন কাজটি করতে পারবো। যারা সদ্য ছেড়েছেন ধূমপান তারা কি করেছিলেন এই সমস্যা দূর করতে , তাদের কথা অনুসারে সংক্ষেপে সাজিয়ে বলা যায় :

১। একটা কঠিন জেদ তৈরি করা । ইচ্ছাশক্তির উপর বিশ্বাস রাখার মতো সদিচ্ছা তৈরি করার পর ধূমপান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নাও। কোনো দিন ক্ষণ লাগবে না , Do it now.


২। জীবনের মূল্য উপলব্ধি করা । মনে রেখো, সবাই তোমাকে সুস্থই চায় । ধূমপান যেভাবে অসুস্থ করে তা জীবনের মানেটাই পাল্টে দেয়, অর্থাৎ শরীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে উদাসীন করে তোলে।


৩। ধূমপায়ী বন্ধুদের নানা অজুহাতে এড়িয়ে চলো।


৪। ধূমপানের স্থানগুলো এড়িয়ে যাও ।


৫। মৌতাতের বা নেশার ইচ্ছে জাগলে ওই সময়গুলো তোমার প্রিয় কাজে মন দাও। যেমন game, facebook, phone call , youtube বা কোনো ভালোলাগা কাজ যা তোমায় 15 মিনিট এর মত মনকে অন্যদিকে নিয়ে যাবে।


৬। তামাকের নেশা ছাড়ার কিছু মেডিসিন পাওয়া যায় , ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেগুলো ব্যবহার করতে পারো।


৭। খাবার পরে ও কাজের ফাঁকে বিশ্রামের সময় যখন নেশার ইচ্ছে জাগে , আগে আগেই চুইংগাম বা ঐজাতীয় চকলেট মুখে নিতে পারো।

এ বিষয়ে সবচেয়ে কর্যকরি হল হরীতকী । গোটা হরীতকী জোগাড় করো আর ছোট্ট ছোট্ট টুকরো করে কেটে সঙ্গে রাখো। একটুকরো করে মুখে দেবে । দেখবে ম্যাজিক। হাজার বছর থেকেই মানুষের খুব উপকারী ভেষজ হল হরীতকী। এটা মুখে দেয়ার পর আর কিছুই খেতে ইচ্ছে করে না , সিগারেটও না।

ভালো কিছু বই সঙ্গে রাখবে। সময় পেলেই দু পাতা অন্তত পড়বে । মনে রাখবে যে কোনো ভালো কাজ করতে হলে বাধাও আসবে। আর বাধা আসার সঙ্গে সঙ্গে তোমাকেও মানসিক শক্তির পরীক্ষা দিতে হবে। নিজের ইচ্ছাশক্তিকেই জয়ী করে তুলতে হবে। আরেকটা কথা , মনস্তত্ব অনুসারে
21 দিন অর্থাৎ তিন সপ্তাহ যদি কোনোরকমে কাটানো যায় , তবে সেটা মানুষের স্বভাব এ উন্নীত হয়ে যায়। অর্থাৎ যেভাবেই পারো ধূমপান বা তামাক ছেড়ে 21দিন কাটাও , তবেই কেল্লা ফতে। কেননা এর পরে আর ততটা কষ্ট হবে না ধূমপান বা তামাক ছাড়া।

ধূমপান করে না এমন মানুষের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করো। যারা ধূমপান ছেড়েছেন তাদের সঙ্গে সময় কাটাও।

জীবনে এরকম বিষয় জয়লাভ করে শুরু কর । পরে আরো বড় বড় কাজকে সম্ভব করতে পারবেই পারবে । আর সবার কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠো।

ধূমপান নয় কোনো নেশা নয়
জীবন হোক সুখ সমৃদ্ধি
আর স্বাস্থ্যময়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *