শরীর ও স্বাস্থ্য

বাড়িতে অবসাদ মুক্ত থাকতে করণীয় ৮ টি বিষয়

3 Minute Read

ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা কিংবা সমাজের বা দেশের অস্থির অবস্থায় প্রতিটি মানুষের মধ্যেই অবসাদ বা চাপ তৈরি হয়। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের মধ্যেও এই অবসাদ সঞ্চারিত হয় কিন্তু এই সাময়িক অবসাদগুলি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব পরিবারের সদস্যদের সমবেত সহাবস্থানের মাধ্যমে। পরিবারের ছোট বড় সকলের সঙ্গে এমন কিছু কার্যকলাপে অংশ নিতে হবে যা শরীর ও মনকে চাঙ্গা করে একটি অবসাদ মুক্ত সুখী পরিবার গড়ে তুলবে। আসুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই এমন ৮টি বিষয় যা অবসাদ থেকে মুক্ত রাখবে।

১.যোগ ব্যায়াম ও মেডিটেশন :-

প্রাচীন যুগ থেকেই যোগব্যায়াম মেডিটেশনের বিষয়টি চলে আসছে। সকাল-সন্ধ্যায় এমন কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ এবং কিছু যোগ ব্যায়াম রপ্ত করে ফেলুন। আর তাতে বাড়ির বড়দের পাশাপাশি ছোটদের কেও সঙ্গে রাখুন এতে যেমন ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়বে তেমনি সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশও গড়ে উঠবে।
অবসাদ কাটাতে মেডিটেশন বা ধ্যান এর তুলনা নেই। স্মার্টফোনে মেডিটেশনের মিউজিক চালিয়ে সকলে মিলে মেডিটেশন করুন নিয়ম করে।

২. গৃহ কাজ :-

ঘরের নানা কাজ থাকেই। ছোটদের সঙ্গে নিয়ে কাজগুলো করে ফেলুন ঘর গোছানো, গাছে জল দেওয়া, গৃহসজ্জা, নানা কাজগুলোতে সকলে মিলে হাত লাগালে সম্পর্ক যেমন ভালো থাকে, তেমনি সকলের সহযোগিতায় ‘পাশে থাকা’-র অনুভূতি গড়ে উঠবে সেইসঙ্গে অবসাদও দূর হবে।

৩. Art & Craft :-

হাতের কাজের অনেক প্রকারভেদ রয়েছে। ছবি আঁকা অরিগ্যামি থেকে শুরু করে নানা রকমের ক্রাফটের কাজগুলি সকলে মিলে করে ফেলুন। কতগুলি Art & craft একদিনে হয় না। তাই পরিকল্পনা করে হাতে হাতে তৈরি করে ফেলুন সুন্দর চিত্র কলা বা ফুলদানি কিংবা গৃহসজ্জার নানা সুন্দর উপাদান।

৪. ইনডোর গেমস :-

(লুডো, অন্তক্ষরি, স্টোরি টেলিং ইত্যাদি) সকলে মিলে একসঙ্গে বসে যান ফ্যামিলি আড্ডায়। লুডো অন্তক্ষরী বা এরকম কিছু ইনডোর গেম খেলুন। এতে বড়দের সঙ্গে ছোটদের মন ভালো হবে। ছোটদের খেলার সঙ্গীর অভাবে বাড়ছে মোবাইলে আসক্তি। আপনারা তাদের সময় দিন- নিজেদের যেমন অবসাদ দূর হবে তেমনি তাদের থেকেও একাকীত্ব ও মোবাইল-আসক্তি দুটোই দূর হতে থাকবে।

অবসাদ মুক্ত থাকতে করণীয়

৫. রান্নাঘরের কাজ :-

খাবারের নানা ধরনের আইটেম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন। হাতে হাতে উপাদানগুলি কেটে ধুয়ে তৈরি করুন সপ্তাহে তিন-চার দিন। এতে যেমন সময় সুন্দর কাটবে তেমনি খাবারের আয়োজনটাও হয়ে যাবে। সকলে মিলে মিশে একসঙ্গে খাবার তৈরি করার ফলে গড়ে ওঠা পিকনিকের মেজাজটা খুব আনন্দ দেবে ছোট বড় সকলকেই।

৬. একসঙ্গে মুভি দেখা :-

বাছাই করা কোন মুভি দেখতে বসে যান । সময় করে ফ্যামিলি মুভি কিংবা শিক্ষামূলক কোন মুভি এখন টিভিতে, ইউটিউবেও পেয়ে যাবেন। মনে রাখতে হবে ফ্যামিলি মুভিতে বড় ও ছোটদের অনেকগুলি অনুভূতি বা ইমোশন গ্রো করার মতো পরিবেশ থাকে। আর নিজেদের আয়নায় দেখারও সুযোগ ঘটে।

অবসাদ মুক্ত থাকতে করণীয় উপায়

৭. গান-বাজনা-আবৃত্তির ভিডিও তৈরি :-

হাতে আছে স্মার্টফোন। গান-কবিতা আর কোন Art & Craft-এর ভিডিও রেকর্ড করে ফেলুন। ফেসবুকে না পোস্ট করলেও মামা কাকা দিদার কাছে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিন। এতে কোনো কাজকে পারফেক্ট করে ও উপস্থাপনযোগ্য করে তোলার প্রবণতা তৈরি হবে। আর সারাদিন কীভাবে কেটে যাবে বুঝতেই পারবেন না।

৮. লেখা ও পড়া :-

অনেকেই বই পড়তে ভালোবাসেন আবার ছোটদের ক্ষেত্রে সেই বই পড়াই হয়ে ওঠে চাপ-এর বিষয়। তাই ছোটদের সঙ্গে আপনিও পাশে বসে যান কোন পড়া বা লেখার বিষয় নিয়ে। শিশুরা অনুকরণপ্রিয় আপনি যা করবেন তাতে তারাও উৎসাহিত হবে। কথায় বলে- “They do not listen what you say . They listen what you do.”

এছাড়াও বাড়িতে নানা বিষয়ের মজাদার প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারেন। শিশুসুলভ প্রতিযোগিতায় বড়দের ও অংশ নিতে হবে। যেমন অন্তাক্ষরী শব্দ বলা অর্থাৎ কোন শব্দের শেষ বর্ণ দিয়ে অপরজন শব্দ বলবে ৫ বা ৭সেকেন্ড সময় থাকবে বাঁধা ধরা। (যেমন- জল>লবন>নাচ>চান)
এতে ছোটদের শব্দভাণ্ডার যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি সৃজনশীলতাও বৃদ্ধি পাবে। খেলেই দেখুন সবাই মজা পাবেন। তাছাড়া আরও কিছু এ ধরনের খেলা খেলতেই পারেন।যেমন- রোল প্লে। মানে একজন আরেকজনের ভূমিকায় অভিনয় করবেন- মেয়ে হবেন মা, বাবা হবেন ছেলে ইত্যাদি।

মনে রাখবেন আপনার শিশু যেমন আপনার ভবিষ্যৎ তেমনি আপনিও শিশুর ভরসা। তাই ভবিষ্যতকে মজবুত করে তুলতে হলে আপনাকে থাকতে হবে সুস্থ ও আনন্দমুখর। তাই উপরিলিখিত বিষয়গুলির অনুসরণ করে বাড়িতে চাপমুক্ত খুশির বাতাবরণ তৈরি করুন আর হয়ে যান হ্যাপি ফ্যামিলির সদস্য বা সদস্যা।

অবসাদ মুক্ত থাকতে করণীয় উপায় নিয়ে আমাদের লেখাটি কম লাগলো তা আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান। ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। এই ধরনের লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজটি ফল করো।

This Article is Written By – Kishore Majumder

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *