শরীর ও স্বাস্থ্য

কর্টিসল হরমোন কী ? এর প্রয়োজনীয়তা ? ক্ষতিকারক দিক ও তা নিয়ন্ত্রনের উপায়

2 Minute Read

কর্টিসল হরমোন – প্রয়োজনীয়তা – ক্ষতি – নিয়ন্ত্রনের উপায়

কর্টিসল কি ? :-

কর্টিসল এড্রেনাল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একটি হরমোন যাকে স্ট্রেস হরমোন বা মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার হরমোন নামে ডাকা হয়ে থাকে। আমাদের শরীর হুমকি স্বরূপ কিছু অনুভব করলে এড্রেনাল গ্রন্থির উপর চাপ প্রয়োগ করে ফলে কর্টিসল ও এড্রেনালিন হরমোন নিঃসৃত হয়। দেহে কর্টিসল এর মাত্রা বেশি হয়ে গেলে রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কর্টিসল হরমোনের প্রয়োজনীয়তা :-

দেহের অভ্যন্তরে প্রাকৃতিকভাবে কোনো সমস্যা হলে এই হরমোন তৈরি হয়ে স্বাভাবিক ভারসাম্য ঠিক রাখে। এটি জরুরি পরিস্থিতিতে শরীরকে মোকাবেলা করার শক্তি সরবরাহকারী গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন । এই হরমোন শরীরের মধ্যে বিপাকীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে , রক্তে গ্লুকোজ এর সমতা বজায় রাখে , দেহে কার্বোহাইড্রেড ,ফ্যাট ও প্রোটিন সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতে সহযোগিতা করে, বাচ্চা হওয়ার সময় ভ্রূণের বিকাশে সহায়তা করে।

জেনে রাখুন : ইমিউনিটি বৃদ্ধির উপায়

কর্টিসল হরমোনের ক্ষতিকারক দিক :-

কর্টিসল হরমোন অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে বা অতিমাত্রায় কমে গেলে দেহে নানাধরণের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন –

  • ক ) কর্টিসল হরমোনের বৃদ্ধি হলে থাইরয়েড হরমোনের পরিমান কমে। থাইরয়েড হরমোনের অভাবে শরীরে স্ট্রেস তৈরী হয় এবং স্ট্রেসের দুষ্টচক্র চলতে থাকে।
  • খ ) শরীরে এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে দেহের ওজন ও রক্তচাপ বেড়ে যায়।
  • গ ) কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় ফলে হার্টএটাক ও স্ট্রোক হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • ঘ ) কর্টিসল মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে অস্টিওপরোসিস হতে পারে।
  • ঙ) কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কমে গেলে চর্মরোগ ,হজমে সমস্যা ,রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
  • চ) এছাড়া নারীদের অনিয়মিত মাসিক ,প্রজনন ,যৌনক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ,মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ,স্মরণশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।

কর্টিসল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় :-

পড়াশুনার চাপ ,কাজের চাপ ,পরিবার বা পারিপার্শ্বিকতার চাপ এ সবকিছুই আমাদের মধ্যে স্ট্রেস তৈরী করে। মানসিক অশান্তিতে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য ধংসাত্বক হতে পারে। তাই কর্টিসল হরমোন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হলো :

  • ১. গান স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। তাই স্ট্রেস অনুভব করলে পছন্দের গান শুনুন।
  • ২. শরীরচর্চা বা মেডিটেশন স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। কারণ শরীরর্চচার ফলে শরীর সক্রিয় থাকে ফলে মস্তিষ্কে এন্ডোরফিনএর নিঃসরণ বৃদ্ধি পায় এবং স্ট্রেস ও উদ্বিগ্নতা দূর হয়।
  • ৩. Deep Breathing করুন। এর ফলে মস্তিষ্কে বেশি অক্সিজেন পৌঁছবে এবং মস্তিস্ক শিথিল ও শান্ত থাকবে।
  • ৪. প্রানখুলে হাসুন। কারণ হাসি মানুষকে সুখী করে এবং স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করে।
  • ৫. স্বাস্থ্যকর খাবার খান। বেশি করে জল পান করুন।
  • ৬. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। নতুন কিছু শিখুন জানুন, শখের কাজগুলো করুন।

আমাদের দেওয়া তথ্যগুলি ভালো লেগে থাকলে বাকিদের সাথে শেয়ার করুন। আমাদের সমস্ত লেখার আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *